এমবিএসজি – ৩ (ম্যাকলারেন ৮, শুভাশিস ৩১, স্টুয়ার্ট ৩৬)
এমএসসি – ০
মহমেডানকে তিন গোল দিয়ে একলাফে দশ থেকে চারে উঠে এল মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। আইএসএল-এ প্রথম বড় ম্যাচে মহমেডান কিশোর ভারতী থেকে যুবভারতীতে এসেই খেই হারিয়ে ফেলল, হাজার চল্লিশেক দর্শকের সামনে।
এমবিএসজি-র কোচ হোসে মোলিনা সপ্তাহখানেক আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন পরপর খেলা নিয়ে। মাঝে এএফসি কাপের ম্যাচ খেলতে ইরানে যায়নি দল। খানিক বিশ্রাম পেলেন ফুটবলাররা। কোচওডিমিট্রি পেট্রাটোস এবং জেসম কামিংসকে বসিয়ে ম্যাচ শুরু করলেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট আর জেমি ম্যাকলারেনকে প্রথম এগারয় রেখে। স্টুয়ার্ট দলের তৃতীয় গোল করার পাশাপাশি নাম লেখালেন প্রথম দুটি গোলের অ্যাসিস্টে। সঙ্গতভাবেই ম্যাচের সেরা।
৩৬ মিনিটে তিন গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই এমবিএসজির খেলায় ঝাঁঝ কমেছিল। আগে দুবার দু-গোলে এগিয়ে গিয়ে হার বা ড্রয়ের কারণে যতটা মানসিক বাধা ছিল, তৃতীয় গোল হয়ত মুক্তি দিয়েছিল সেই মানসিক ধাক্কা থেকে। তাই দ্বিতীয়ার্ধে মহমেডানের উঠে আসার সুযোগ নিয়ে যতবারই আক্রমণে গেলেন স্টুয়ার্টরা, সাদাকালো রক্ষণে হাহাকার। পদম ছেত্রি কয়েকবার বাঁচালেন, বেশিরভাগ সময়েই সুযোগ নষ্ট করলেন সুপার জায়েন্ট ফুটবলাররাই।
লিস্টনের কর্নারে বক্সের মধ্যে গ্রেগ স্টুয়ার্টের হেড থেকে জেমি ম্যাকলারেনের হেডে প্রথম গোল আট মিনিটে। দ্বিতীয় গোলেরও অ্যাসিস্ট গ্রেগের। মহমেডান অর্ধের মাঝামাঝি বাঁদিকে ফ্রিকিক পেয়েছিল এমবিএসজি, ঘানার জোসেফ আদজেই-এর অনাবশ্যক পা-উঁচু ফাউলে। গ্রেগের ফ্রিকিক বক্সের মাঝখান থেকে বিনাবাধায় হেডে গোল করে যান শুভাশিস। মহমেডানের গোলরক্ষক পদম ছেত্রির কাছে আরও ভাল কিছু প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু বল ধরে রাথতে পারেননি। তৃতীয় গোলের সয়ম যদিও শুভাশিসই পাস দিয়েছিলেন গ্রেগকে, কিন্তু ওই জায়গায় বল-পাওয়া মানে অ্যাসিস্ট বলা কঠিন। আউটসাইডে গ্রেগ ছিটকে দেন মহমেডানের দুই স্টপারকে, তারপর ডান পায়ে বল রাখেন ভেতরের দিকে, পদমের বিশেষ কিছু করার ছিল না এবার।
আই লিগ থেকে উঠে এসে মহমেডানকে প্রথম তিন ম্যাচে যতটা উজ্জ্বল দেখিয়েছিল, তুলনায় কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই অবশ্য জারিজুরি খতম। আলেক্সিস গোমেস আর মির্জালোল কাসিমভ, দুই বিদেশি মাঝমাঠ ধরে রাখছিলেন। এই ম্যাচেও চেষ্টার ত্রুটি ছিল না তাঁদের। কিন্তু বিপক্ষ তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী এবং পেশাদার। দুপাশে মনবীর সিং আর লিস্টন কোলাসোর লাইন ধরে দৌড়, মাঝমাঠে স্টুয়ার্টের পায়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। সাদাকালো শিবিরের কাছে যার জবাব ছিল না। এবারের আইএসএল-এ দ্বিতীয় জয় পেতে ততটা লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হল না, যতটা হয়ত ভেবেছিলেন মোলিনা। বিশেষ করে, কান্তিরাভায় আগের ম্যাচে বেঙ্গালুরুর কাছে এমনই হতাশাজনক হারের পর।
আপাতত আইএসএল-এর কলকাতা পর্বে পুজোর ছুটি। যুবভারতীতে আবার খেলা ১৯ অক্টোবর, আরও একটি বড় ম্যাচে।
এমবিএসজি – বিশাল কাইথ; শুভাশিস বোস, আলবের্তো রোদরিগেজ, টমাস অলড্রেড, আশিস রাই; লিস্টন কোলাসো, লালেংমাউইয়া রালতে, অনিরুধ থাপা (দীপক টাংরি ৮১), গ্রেগ স্টুয়ার্ট (আশিক কুরুনিয়ান ৮১), মনবীর সিং (সুহেল ভাট ৭৫); জেমি ম্যাকলারেন (ডিমিট্রি পেট্রাটোস ৭৫)।
এমএসসি – পদম ছেত্রি; গৌরব বোরা, জোদিংলিয়ানা, জোসেফ আদজেই, ভানলালজুইদিকা ছাকছুইক (সামাদ আলি মল্লিক ৬৭); মির্জালোল কাসিমভ (ওয়াহেংবাম আঙ্গৌসানা ৭৬), অমরজিৎ সিং কিয়াম (লালরিনফেলা খিয়াংতে ৪৬), আলেক্সিস গোমেস, মাকান উইঙ্কল ছোটে (বিকাশ সিং ৪৬), লালরেমসাঙ্গা; কার্লোস হেনরিক ফ্রাঙ্কা (সিজার মানজোকি ৪৬)
রেফারি – আর বেঙ্কটেশ