কাশীনাথ ভট্টাচার্য / বরুণের এনে-দেওয়া জয় সহজতর সল্টের ব্যাটে

দিল্লি – ১৫৩/৯

কেকেআর – ১৫৭/৩

কলকাতা ৭ উইকেটে জয়ী

ম্যাচের সেরা – বরুণ চক্রবর্তী

টস – দিল্লি, ব্যাটিং

কলকাতা যখন দশ পয়েন্টে পৌঁছেছিল, দিল্লি তখন নবম! আর, ইডেনে কলকাতার বিরুদ্ধে খেলার আগে অবস্থা এমন – জিতলে দিল্লি উঠে আসবে দ্বিতীয় স্থানে, কলকাতা নেমে যাবে একধাপ।

টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়ে ঋষভ পন্থের দিল্লি অবশ্য শুরুতেই খেই হারিয়ে ফেলল। দ্বিতীয় ওভারে পৃথ্বী শ আউট হওয়ার পরও আশা ছিল, তৃতীয় ওভারেই জেক ফ্রেজার-ম্যাকগুর্ক আউট হওয়ার পর উইকেট হারানোর পালা চলল নিয়ম করে। পন্থ ২০ বলে ২৭ করলেন ১৮ রানে হরষিত রানাকে লোপ্পা ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়ে। তারপর বলার মতো রান কুলদীপ যাদবের ব্যাটে, অপরাজিত ৩৪ এল ২৬ বলে। কিন্তু যে-ইনিংসে কুলদীপ ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান করেন, দলের রান ১৫৩য় আটকে পড়বে, আশ্চর্য কী!

কেকেআর ম্যানেজমেন্ট নাকি চেয়েছিল, উইকেটে একটু হলেও স্পিন থাকুক। যে-উইকেটে লখনউ সুপার জায়েন্টসকে পয়লা বৈশাখে ১৬১ রানে আটকে দিয়েছিলেন কলকাতার বোলাররা সেই উইকেটেই দিল্লি-বধ করলেন বরুণ চক্রবর্তী, এবারের আইপিএল-এ শেষ পর্যন্ত ছন্দে ফিরে। চার ওভারে তাঁর ১৬ রানে তিন উইকেট। আউট করলেন পন্থ, স্টাবস এবং কুমার কুশাগ্রকে। তার আগে বৈভব অরোরার কথাও বলা জরুরি। সাই হোপ বোল্ড হয়েছিলেন যে-বলে, ম্যাচের সেরা অবশ্যই। মিচেল স্টার্ক যথারীতি ছন্দহীন। এই ম্যাচেও প্রথম দু-ওভারে ২৭, শেষে তিন ওভারে ৪৩। এবং কুলদীপও তাঁকে সেই তৃতীয় ওভারে ছয় মারার পর বাধ্য হয়েই কলকাতার অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার আর ২০তম ওভারে তাঁর হাতে বল তুলে দিতে পারেননি! আন্দ্রে রাসেল আগের উনিশ ওভারের মধ্যে একটিও না-করা সত্ত্বেও বল করতে এসেছিলেন শেষ ওভারে।

আগের তিন ম্যাচে তিনবারই প্রথমে ব্যাট করে ২০০-র গণ্ডি পেরিয়ে, শেষ ম্যাচে তো ২৬১ তুলেও হারের পর, ঘরের মাঠে চতুর্থ ম্যাচে সহজ জয় তুলে নেওয়ার পথে কাণ্ডারি আবারও দুই ওপেনার। তাঁদের সুবিধা করে দেন লিজাড উইলিয়ামস, প্রথম ওভারে ২৩ রান দিয়ে এবং দ্বিতীয় ওভারে ক্যাচ ফেলে। ফিল সল্ট তারপর ৩৩ বলে ৬৮, আরও একটি অর্ধশতরানের মালিক। সুনীল নারিন ১০ বলে ১৫, কিন্তু আউট হওয়ার সময় স্কোরবোর্ডে ৭৯! পাওয়ার প্লে-র ছয় ওভারে ওই ৭৯ তোলার কারিগর অবশ্যই সল্টের ৬০। চাপহীন ম্যাচে দুর্দান্ত শুরুর পর যখন ইনিংস টেনে নিয়ে গিয়ে শেষ করা আসা জরুরি, সল্ট সে-সুযোগ হেলায় হারালেন। যেমন রিঙ্কু সিংও পারলেন না তাঁকে তিন নম্বরে তুলে আনার যৌক্তিকতা বোঝাতে। ১১ বলে ১১ রিঙ্কুর। দিন দুয়েকের মধ্যে যেখানে টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল নির্বাচন, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিমানে আসন নিশ্চিত করতে চাপহীন ম্যাচে হলেও রান খানিকটা বাড়তি সাহায্য করতেই পারত রিঙ্কুকে।

দুই আইয়ার শ্রেয়স (৩৩) আর বেঙ্কটেশ (২৬) আর কোনও উইকেট হারাতে দেননি, শেষে ছয় মেরে জয়ে পৌঁছে দেন বেঙ্কটেশ, ২১ বল বাকি থাকতেই। ৭ উইকেটে জিতে কেকেআর ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই থাকল। দিল্লি ১১ ম্যাচে ১০ নিয়ে ষষ্ঠ। পাঁচ ম্যাচ বাকি, প্লে অফের দিকেই এগোচ্ছে কলকাতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *