ইস্টবেঙ্গল – ০ জামশেদপুর – ০
কাশীনাথ ভট্টাচার্য
কলকাতা, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
তিন বছরে ১১ দলের মধ্যে যথাক্রমে নবম, একাদশ ও নবম হওয়ার পর চতুর্থ বছরে লালহলুদ সমর্থকরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন বার্সেলোনার কার্লেস সুয়াদ্রাতকে কোচ হিসাবে পেয়ে। হয়ত কিছু বদল, খারাপ থেকে একটু হলেও ভালর দিকে। কিন্তু দশম আইএসএল-এর শুরুটা বলে দিল, তেমন প্রত্যাশা কম। ঘরের মাঠে গোলশূন্য শুরুতে সান্ত্বনা একটাই – ঝুলিতে অন্তত একটা পয়েন্ট!
ম্যাচের সবচেয়ে আলোচিত দিক অবশ্য ৯৫ মিনিটে। রেফারি জামাল মহম্মদ জামশেদপুরের পরিবর্ত ফুটবলার এমিল বেনিকে প্রথমে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দিয়েও পরে সিদ্ধান্ত পাল্টে হলুদ দেখিয়ে আবার ডেকে নিলেন মাঠে! রেফারিরা ভুল করতেই পারেন। বিশেষত ‘ভার’-এর সুবিধা নেই যখন। তবুও নিজের সিদ্ধান্ত এভাবে পাল্টাতে কমই দেখা যায়। আর যে ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্তই উঠে আসে সবার আগে ম্যাচ রিপোর্টে, বোঝা সহজ, ম্যাচে তেমন ওঠাপড়া ছিল না।
বার্সেলোনা ডিএনএ-তে থাকলে সাধারণত ৪-৩-৩ ছকে খেলানো প্রায় নিয়ম। জোহান ক্রুয়েফের মসতিষ্কপ্রসূত লা মাসিয়া আকাদেমি থেকে উঠে এলে তেমনই স্বাভাবিক। কিন্তু, কোচদের কাজ সবসময় সেই নিয়ম মেনে হয় না। হাতে-থাকা ফুটবলারদের দক্ষতা অনুযায়ী দল সাজাতে হয়। ইস্টবেঙ্গলের এবারের দলে তেমন তিন মিডফিল্ডার এবং তিন ফরোয়ার্ড কোথায়?তাই ৪-৪-২ শুরু, স্পেনীয় খাবিয়ের সিবেরিও এবং সদ্য চুক্তিবাড়ানো নাওরেম মহেশকে ওপরে রেখে। গতবারের আইএসএল-এ ইস্টবেঙ্গলের সর্বোচ্চ গোলদাতা ব্রাজিলীয় ক্লেইতোন সিলবা এখনও শুরু থেকে খেলার মতো জায়গায় পৌঁছতে পারেননি বলে মাঠে এলেন শেষ ৩০ মিনিটের জন্য। তাতে অবশ্য খেলার ফলাফলে বিশেষ প্রভাব পড়েনি।
গোল পেতেই পারত কুয়াদ্রাতের দল। অন্তত বারদুয়েক সিবেরিও একাই দায়ী রইলেন, বল তিনকাঠিতে পাঠাতে না-পেরে। গোটা দুয়েক শটও সাইড নেটে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে খানিকক্ষণ বেশ চাপ বাড়িয়েছিল কলকাতার দল। কিন্তু সম্ভাবনা থাকলেও গোলমুখ খুলে সরাসরি গোলরক্ষককে – রেহনেশ, যিনি আগে খেলেছিলেন ইস্টবেঙ্গলে – তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারা যায়নি। একবারই শুধু ৪৪ মিনিটে মন্দার দেশাইয়ের শট ডানপা বাড়িয়ে বাঁচানো ছাড়া।
জামশেদপুর অষ্টম সংস্করণে শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আইএসএল-এ। ইংরেজ কোচ স্কট কুপারের প্রশিক্ষণে তারা এবার তত দূর যাওয়ার মতো মনে হয়নি। ইস্টবেঙ্গলের মতোই তারাও কিছু সম্ভাবনা দেখিয়েছিল গোলের, কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি, সরাসরি তেমন পরীক্ষায়ও পড়তে হয়নি প্রভসুখন গিলকে। যদিও প্রথম ম্যাচ সবে, কিন্তু জামশেদপুরের পারফরম্যান্সে তেমন উজ্জ্বলতা নেই যা দেখে মনে হতে পারে ভবিষ্যতে বিরাট কিছু করতে পারবে তারা।
তাই পারস্পরিক লড়াইতে সাত ম্যাচে আপাতত তৃতীয় ড্র এই দুই দলের। ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচ ৩০ সেপ্টেম্বর হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে, যুবভারতীতেই। সেই ম্যাচে এমন খেললে পয়েন্টের খাতায় না-ও জুটতে পারে এক!
ইস্টবেঙ্গল : প্রভসুখন গিল; নিশু কুমার (এডউইন বংশপাল ৭৭), হরমনজ্যোৎ খাবরা, খোসে আন্তোনিও পারদো (স্পেন), মন্দার রাও দেশাই; সাউল ক্রেসপো (স্পেন), শৌভিক চক্রবর্তী (মহম্মদ রাকিপ ৫৭), বোরখা এরেরা গোলজালেস, স্পেন (ক্লেইতোন সিলবা, ব্রাজিল ৫৭), নন্দ কুমার; খাবিয়ের সিবেরিও, স্পেন, নাওরেম মহেশ (গুইতে পেকা, ৯০)
রেফারি – জামাল মহম্মদ
ছবি – এফএসডিএল