কাশীনাথ ভট্টাচার্য
কলকাতা ● ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
ইডেনে পঞ্চম ফাইনালে শুরুতেই পেছনের পায়ে বাংলা!
সৌ্রাষ্ট্রের ব্যাটারদের চাপে ফেলতে সবুজ উইকেট রাখা হয়েছিল। টস জিতে বাংলাকে প্রথমে ব্যাট করতে ডেকে সেই সবুজ উইকেটে আগুন ঝরালেন সৌরাষ্ট্রের অধিনায়ক জয়দেব উনাদকাট এবং চেতন শাকারিয়া। দুই বাঁহাতির দাপটে অসহায় বাংলা প্রথম ঘণ্টাতেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ৩৪।
রনজি ফাইনালে সৌরভ গাঙ্গুলির অভিষেকের পর বাংলা ক্রিকেটে কি প্রথাই হয়ে দাঁড়াচ্ছে অভিষেক? ২০২০-তে রাজকোটে কোচ অরুণ লাল টুপি দিয়েছিলেন সুদীপ ঘরামিকে। এবার বাংলার পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্তে সেই সম্মান পেলেন সুমন্ত গুপ্ত। প্রথম বল কভারে ঠেলে এক রান নিয়ে শুরু করলেও শেষ সেখানেই। শাকারিয়ার বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সুমন্ত ফেরার আগেই অবশ্য ঈশ্বরণকে ফিরিয়েছিলেন সৌরাষ্ট্রের প্রথম রনজিজয়ী অধিনায়ক উনাদকাট। ব্যাট-প্যাড হয়ে ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে ক্যাচ গিয়েছিল জয় গোহলির কাছে।
সুমন্তর দু’বল পরই আউট সুদীপ, একই ওভারে। সুমন্তর বলটা বাইরে গিয়েছিল, সুদীপও একই ভেবে ছেড়ে দিলেন। শাকারিয়ার বল এবার ঢুকল ভেতরে, নিয়ে গেল অফস্টাম্প। বাংলার তখন রানের চেয়ে উইকেট পড়েছে বেশি। তিন উইকেট, দু’রানে!
অনুষ্টুপ মজুমদারের সঙ্গে উইকেটে তখন বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি, রনজি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন যাঁকে খেলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এখনও, রাজ্যের মন্ত্রী হওয়ার পরও। ভেবেছিলেন হয়ত, ঘরের মাঠে রনজি ফাইনাল খেলার সুযোগ পেয়ে স্বপ্ন সত্যি করবেন, যা পারেননি তিন বছর আগে রাজকোটে নিজের শততম রনজি ম্যাচে। তাঁর ব্যাটেই এল প্রথম বাউন্ডারিও। কিন্তু অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বলে অযথা একেবারেই অ-অধিনায়কসুলভ ব্যাট চালিয়ে, গালিতে ক্যাচ দিয়ে।
দায়িত্ব আবারও অনুষ্টুপ ওরফে রুকুর কাঁধে। কিন্তু রোজ তিনিই রান করবেন, হয় না। ফাইনালের প্রথম ইনিংসে তিনিও পারলেন না। এবার রনজিতে সর্বোচ্চ রানের মালিককে ফিরতে হল চিরাগ জানির বলটা অতিরিক্ত লাফানোয়, ক্যাচ গেল উইকেটের পেছনে। বাংলার প্ঞ্চম উইকেট, ৩৪ রানে।
ইডেনে সকালে বল নড়ে, ক্রিকেট অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ! বাংলার তিন পেসার যাতে সুবিধা পেতে পারেন, উইকেটে সবুজাভা ছিল। উনাদকাট-শাকারিয়া, দুই বাঁহাতি পেসার সেই সুবিধা হাত ঘুরিয়ে নিলেন। দ্বিতীয় ঘণ্টায় উইকেট পড়ার গতি কমল। আকাশ ঘটক আর শাহবাজ আমেদ খানিকটা সামলেছিলেন। কিন্তু, অনভিজ্ঞ আকাশের ধৈর্যচ্যুতি ঘটল নিজের ইনিংসের ৪৮তম বলে। পুল করতে গেলেন, ব্যাটে-বলে হল না, ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে সহজ ক্যাচ উনাদকাটকে। ৬৫ রানে পড়ল ষষ্ঠ উইকেট।
শাহবাজের সঙ্গে আরও এক বাঁহাতি অভিষেক পোড়েল উইকেটে। ৭৭ রানে দুবার ডিআরএস। শাহবাজের ক্যাচ দ্বিতীয় স্লিপে নেওয়ার আগে মাটি ছুঁয়ে ফেলল, অভিষেকের ব্যাটে না লেগেই বল পৌঁছেছিল উইকেটরক্ষকের হাতে। তাই লাঞ্চে ছয় উইকেট হারিয়ে ৭৭ বাংলার। উইকেট ক্রমশ সহজতর। বাংলার দুই বাঁহাতি ব্যাটার কি জবাব দেবেন সৌরাষ্ট্রের দুই বাঁহাতি বোলারকে?
স্কোর –
বাংলা প্রথম ইনিংস
সুমন্ত গুপ্ত ক জ্যাকসন ব শাকারিয়া ১
অভিমন্যু ঈশ্বরণ ক গোহলি ব উনাদকাট ০
সুদীপ ঘরামি ব শাকারিয়া ০
অনুষ্টুপ মজুমদার ক দেশাই ব জানি ১৬
মনোজ তিওয়ারি ক বিশ্বরাজ ব উনাদকাট ৭
আকাশ ঘটক ক উনাদকাট ব শাকারিয়া ১৭
শাহবাজ আমেদ অপরাজিত ২৬
অভিষেক পোড়েল অপরাজিত ৫
অতিরিক্ত ৬
মোট ৭৮/৬ (২৮ ওভারে)
উইকেট পতন – ১/১, ২/১, ৩/২, ৪/১৭, ৫/৩৪, ৬/৬৫
বোলিং –
জয়দেব উনাদকাট : ৯-২-২৬-২
চেতন শাকারিয়া : ৯-২-২৮-৩
চিরাগ জানি : ৬-২-১১-১
প্রেরক মানকড় : ৩-২-৮-০
ধর্মেন্দ্র সিং জাডেজা : ১-১-০-০